১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চন্দনাইশের এসএসসি ৯১-ব্যাচ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের মিলনমেলা

আজ কোনো স্মৃতি নেই, সব কিছুই জীবন্ত

“বন্ধু মানে ভিন্ন দেহে, অভিন্ন এক মন, বন্ধু মানে একের প্রতি, অপর আর একজন”। প্রত্যেক জিনিস যত নতুন হয় তত উৎকৃষ্ট হয়, আর যত পুরনো হয় তত নিকৃষ্ট হতে থাকে। একমাত্র বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, বন্ধুত্ব যত পুরনো হয় তত উৎকৃষ্ট হতে থাকে। যদিও প্রযুক্তির যুগে যান্ত্রিক মানুষের ফেসবুক কেন্দ্রিক ‘ডিজিটেল ফ্রেন্ড’ এর অভাব নেই, তারপরও সত্যিকারের প্রকৃত অকৃত্রিম বন্ধু অভাব রয়ে গেছে অনেক বেশি। বিশেষ করে কর্মব্যস্ত নাগরিক জীবনে নিজেদের মধ্যকার ‘দেখা-দেখি’টা কারও কারও জীবনে যেন সীমাবদ্ধ ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের পর্দাতেই।
‘আমাদের পথ চলা বন্ধুত্বে’’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিগত ৩৩ বছর পর চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এসএসসি ৯১-ব্যাচ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের দিনব্যাপি মিলন মেলা উৎসব মুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। চন্দনাইশের ২৫টি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৩শ’ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানস্থ সাথী কমিউনিটি সেন্টার মুখরিত হয়ে উঠে আনন্দ আড্ডা, গল্প ও ছাত্র জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি রোমন্থনে।

স্কুল জীবনের হারিয়ে যাওয়া বাঁধভাঙা বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছেদকে আরেকবার ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ মিলেছিলো এই আয়োজনে। দীর্ঘ সময় পর সামনা সামনি হয়ে অনেকেই হারিয়ে গেছেন স্মৃতির ভেলায়। কেউ ব্যস্ত ছিলেন কুশল বিনিময়ে, কেউ আবার সৌহার্দ্যে মিলিয়েছেন বুক, অনেকেই খুলেছেন গল্পের ঝাঁপি। এরই মধ্যে একজন বলে উঠলেন, আজ কোনো স্মৃতি নেই, সব কিছুই জীবন্ত মনে হচ্ছে।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে সেতু বন্ধন তৈরির উদ্যেশ্যে এই আয়োজনে সামিল হয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থী অনেকে ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, রোটারীয়ান, ব্যাংকার, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, কেউবা আবার শিক্ষক কিংবা ব্যবসায়ী। তাদের মতে বিশেষ করে ‘বন্ধু ’ শব্দটা ছোট হলেও এর পরিধি এতটাই বিস্তৃত যে পরিমাপ করার সাধ্য কারো নেই। বলতে গেলে বন্ধু মানেই আত্মার টান, ভালোবাসার বন্ধন, হৃদয়ের স্পর্শ, একেকটা বন্ধুই অন্য বন্ধুর জন্যই ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা।

সকাল থেকে প্রাপ্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয় অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন। দীর্ঘদিন যোগাযোগ না থাকা বন্ধুরা একে অপরকে পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খোঁজ নেন পরিবার-পরিজনের। অনেকের চেহারা চেনা চেনা লাগলেও পরিচয় জেনেই নিশ্চিত হন তিনিই সেই স্কুল বন্ধু। দীর্ঘদিন পরে দেখা হওয়ায় সহপাঠিদের জড়িয়ে ধরে কান্নাও করছেন অনেকে। সব মিলিয়ে এক আবেগাপ্লুতে পরিণত হয়েছে অনুষ্ঠানস্থল। হৈ-হুল্লোড়, আড্ডা, হাসিঠাট্টা ও বন্ধুবাৎসল্য সুলভ যতসব তামাশা। সেই সাথে দল বেধে ছবি আর ডিজিটাল যুগের সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায় সেখানে। এ যেনো অন্য এক জগৎ, অন্য এক প্রতিযোগিতা।
স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে প্রাক্তন ক্ষিার্থীরা বলেন, এটা একটা অরাজনৈতিক প্ল্যাটফরম, যার মাধ্যমে চন্দনাইশের অসম্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, অসহায় গরীব-দুস্থ মানুষের সাহায্যকরণসহ নানাবিধ সামাজিক কর্মকান্ড করতে সক্ষম হবে। এগিয়ে যাক প্রাণের শিকড় প্রাণের সংগঠন চন্দনাইশের প্লাটফর্ম ৯১ ব্যাচ। সুন্দর আগামী রচনা করাই হোক এস.এস.সি ৯১ ব্যাচ’র মূলমন্ত্র।

আরও পড়ুন...