রাজশাহীতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষকে বরণ করা হয়েছে। রবিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৭ টায় নগরীর আলুপট্টি পদ্মারপাড়ের বটতলায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সেখানে বৈশাখী গান ও নৃত্যের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেন বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় নগরের বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা; অগ্নিস্নানে সুচি হোক ধরা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় নানা শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মানুষ অংশ গ্রহণ করে।
এরপর সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় পান্তাভোজ। বিকেলে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষ্যে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে মঙ্গল শোভাযাত্রা সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বর্ষবরণের শুভসূচনা হয়। শিক্ষার্থী ও সহশিক্ষা বিএনসিসি, রোভার, রেডক্রিসেন্ট, রেঞ্জারের ছাত্রীবৃন্দের অংশগ্রহণে এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দীকা।
অন্যদিকে সকাল পৌনে দশটায় রাজশাহী কলেজ রবীন্দ্র-নজরুল চত্বরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে নববর্ষে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক। এরপর বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত বিশেষ বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ। এসময় তাঁরা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। পরে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি ও বিবর্তন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক। সভা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
ঘণ্টা তিনেক বিরতি পর বিকাল সাড়ে ৪টায় পুনরায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ সময় সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে স্থানটি জনারণ্যে পরিণত হয়।
এছাড়া নববর্ষ উপলক্ষ্যে শিশু পরিবারে শিশুদের নিয়ে এবং কারাগারে কারাবন্দিদের অংশগ্রহণে বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত ঐতিহ্য ধারণ করে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি উপলক্ষ্যে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, শিশুপরিবার, শিশুসদন, এতিমখানা ও নগরীর হাসপাতালগুলোতে উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
এদিন বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান সর্বসাধারণের জন্য সকাল-সন্ধ্যা পর্যন্ত উন্মুক্ত রাখা হয়।